মনির/হুদা/রেজভী/রিদওয়ান ১ জুন ২০২৪ , ১১:৩২:২৫ প্রিন্ট সংস্করণ
ধূমপানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ক্ষতিকর প্রভাব কোনটাই কম নয় বলে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের আলোচনায় অভিমত।
ধূমপানের কারণে গলায় ও ফুসফুসে ক্যান্সার হয়। শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা হয় এমনকি ধূমপান মৃত্যু ঘটায়। এসব প্রত্যক্ষ ক্ষতিকর প্রভাবের পাশাপাশি ধূমপানের রয়েছে অনেক পরোক্ষ প্রভাব। ধূমপায়ী পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি, নবজাতক বাচ্চা ও শিশুদের ক্ষতি, ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব, সমাজের প্রত্যেকটি শ্রেণির মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব, তামাক চাষের জায়গায় মাটি ও ফসলের ক্ষতিকর প্রভাব, এমনকি ধূমপান থেকে সৃষ্ট আগুনের মাধ্যমে বড় ও ছোট ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা, এমনটাই মতামত উঠে আসে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের আলোচনা সভায়।
৩১মে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে “তামাক কোম্পানির আগ্রাসন প্রতিহত করি, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি” এই স্লোগানে আজ শুক্রবার ময়মনসিংহ বিভাগীয় পর্যায়ে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভাগীয় কমিশনার উম্মে সালমা তানজিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আলোচকবৃন্দ মতামত ব্যক্ত করেন যে, ধূমপান হিসেবে শুধু সিগারেট নয় সরাসরি তামাকজাত দ্রব্য তামাক পাতা, গুল, জর্দা ইত্যাদি ব্যবহার করা হচ্ছে। রাস্তাঘাট, পাবলিক পরিবহণ, বিনোদন পার্ক জায়গাগুলোতেও মানুষ এখনো ধূমপান করছে। প্রতি বছর প্রায় ১ লক্ষ ৬১ হাজারের অধিক লোক তামাকের ক্ষতিকর প্রভাবে মারা যাচ্ছে। তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণকারী বা ধূমপায়ীদের মাঝে প্রায় শতকরা ৯৮ভাগ ধূমপায়ী সরাসরি ধূমপানে জড়িত। নিকোটিন ছাড়াও হাজারের অধিক ক্ষতিকর কেমিক্যাল রয়েছে তামাক পণ্যে। ই-স্মোকিংয়ের ক্ষতিকর মাত্রা কোনো অংশেও কম নয়।
বক্তারা আরও জানান, আগে কোনো আইন ছিল না। ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে এখন আইন প্রণয়ন হয়েছে। অনধিক ১৮ বৎসর বয়সের কোনো ব্যক্তির নিকট তামাক বা তামাকজাত দ্রব্য বিক্রিয় নিষিদ্ধ। পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহণে ধূমপান শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
তামাকের কোনো সুফল আমরা দেখি না। সরকার এখাত হতে যে টাকা রাজস্ব পায় তার চেয়ে বহুগুণে জনস্বাস্থ্যে ব্যয় করতে হয়। অর্থাৎ এটার সুফল কাজে আসেনা। সভায় এ ধরনের অভিমতও জানানো হয়।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন- আসুন সকলে মিলে তামাক ও ধূমপান বর্জন করি, এ আহ্বানকে জনসাধারণের মধ্যে পৌঁছে দিতে কাজ করার লক্ষ্যে একাত্মতার মতামত ব্যক্ত করেন উপস্থিত আলোচকবৃন্দ।
সভায় সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, ডেপুটি সিভিল সার্জন, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, বিভাগীয় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, স্কুলের শিক্ষক প্রতিনিধি, ছাত্রছাত্রীর প্রতিনিধিসহ আরো অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি টাউন হল প্রাঙ্গণ হতে শুরু হয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় পর্যন্ত গিয়ে শেষ হয়।