বিজ্ঞান

কনুইয়ে হঠাৎ বেকায়দায় আঘাত পেলে ইলেকট্রনিক শক লাগে যেন! কেন এমন হয়

  লেখক: শিক্ষার্থী, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ৩ এপ্রিল ২০২৪ , ১:৪৬:৪৭ প্রিন্ট সংস্করণ

কনুইয়ে হঠাৎ বেকায়দায় আঘাত পেলে ইলেকট্রনিক শক লাগে যেন! কেন এমন হয়
ছবি : সংগৃহীত

আপনি কি জানেন ,কনুইয়ে হঠাৎ বেকায়দায় আঘাত পেলে ইলেকট্রনিক শক লাগে যেন! কেন এমন হয়

কনুইয়ের একটুখানি ওপরে ভুলে টোকা বা জোরে চাপ লেগে গেলে যে অদ্ভুত রকম যন্ত্রণার এবং বৈদ্যুতিক শকের মতো শিহরণের অনুভূতি হয়, এটা আসলে কোনো হাড় থেকে আসে না।

ঘাড় থেকে হাত পর্যন্ত যে স্নায়ুটি নেমে এসেছে, আলনার স্নায়ু (Ulna nerve), এই অনুভূতিটা মূলত সেখান থেকে আসে। এই স্নায়ুর উৎপত্তি মেরুদণ্ডে। সেখান থেকে ঘাড় দিয়ে বাহুতে এসে হাতের চতুর্থ ও পঞ্চম আঙুলের মাথায় গিয়ে শেষ হয়েছে। স্নায়ুটি হাড় এবং পেশি দিয়ে আবৃত থাকে।

কিন্তু কনুইতে ‘কিউবিটাল টানেল’ নামে একটা অংশ আছে, যেখানে এই স্নায়ুটি সরাসরি ত্বকের নিচেই থাকে-কোনো হাড় বা পেশি দিয়ে আবৃত থাকে না। যদি ভুলে ওই জায়গাটাতে টোকা বা চাপ লেগে যায়, স্নায়ুটি সংকুচিত হয়ে চামড়া আর হিউমেরাস নামের হাড়ের মেডিয়াল এপিকন্ডাইল নামে উঁচু হয়ে থাকা অংশটির সঙ্গে বাড়ি খায়।

এতে স্নায়ুটির ওপরে সরাসরি চাপ পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে এটি মস্তিষ্কে তীব্র যন্ত্রণার একটা সিগন্যাল পাঠায়। তখন কনুই থেকে বাহুর নিচের দিকে এবং হাতের অনামিকা ও কনিষ্ঠ আঙুলে হঠাৎ করে ব্যথা ও বৈদ্যুতিক শকের মতো অনুভূতি হয়। ইংরেজিতে ব্যাপারটাকে বলা হয়, Bumping your funny bone!

ফানি বোন নামটা কীভাবে এসেছে, সেটা নিয়ে দুই রকম মত আছে। ঘাড় থেকে কনুইতে নেমে আসা বড় হাড়টির নাম হচ্ছে হিউমারাস। নামটির সঙ্গে ইংরেজি Humorous শব্দটির মিল আছে, যার অর্থ মজার কিছু। সেখান থেকে হয়তো নামটি আসতে পারে। আবার কেউ কেউ মনে করেন, আলনার স্নায়ুটিতে টোকা পড়লে বা চাপ খেলে যে অদ্ভুত অনুভূতিটি তৈরি হয়, সেখান থেকেও ‘ফানি বোন’ নামটির উৎপত্তি হতে পারে।

নামটা যেভাবেই আসুক না কেন, ফানি বোন যে আসলে কোনো হাড় নয়, একটা স্নায়ুমাত্র, সে ব্যাপারটা আসলেই মজার।