ধর্ম

শবে কদরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

  প্রতিনিধি ৭ এপ্রিল ২০২৪ , ৩:০৬:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ

শবে কদরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
ছবি : সংগৃহীত

শবে কদরের গুরুত্ব ও তাৎপর্য

৬১০ হিজরী সনের এই রাতে নাজিল হয়েছিল পবিত্র কুরআন শরীফের প্রথম ৫ আয়াত। মক্কার জাবালে নূর পর্বতের হেরা গুহায় ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.) মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর কাছে এসেছিলেন আল্লাহর বাণী নিয়ে। এটি ছিল আল কুরআনের ৯৬-তম সূরা আল আলাকের প্রথম ৫টি আয়াত। এরপর থেকে টানা ২৩ বছরে পুরো কুরআন নাজিল সম্পন্ন হয়।

এই মূল্যবান রাতটিকে উদ্দেশ্য করে কুরআন মাজিদের সম্পূর্ণ একটি সূরাই রয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, কদরের রাত্রি হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ সময় সৃষ্টিকর্তার নির্দেশে ফেরেশতারা পৃথিবীর আকাশে নেমে আসেন এবং ভোর না হওয়া পর্যন্ত শান্তি বর্ষণ করতে থাকেন।

অর্থাৎ এই এক রাতের একটি মাত্র নেক আমল হাজার মাসের বরকত নিয়ে আসে। সারা জীবন ইবাদত করেও এ রাতের ইবাদতের মাধ্যমে যে বরকত পাওয়া যায় তার সমান হবে না। একই সঙ্গে এটি আল্লাহর রহমত ও ক্ষমা পাওয়ার রাত।

মুহাম্মদ (সা.) এই সম্মানের রাতটির জন্য অপেক্ষা করতেন। রমজানের শেষ দশ দিন শুরু হতেই তিনি ইতিকাফে বসে যেতেন এবং সারা রাত ধরে নামায পড়তেন।

শবে কদরে করণীয়

পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত ও অধ্যয়ন

কুরআন নাজিলের এই সময়কে সম্মানিত করতে আত্মনিয়োগ করা যেতে পারে কুরআন গবেষণায়। এ সময় শুধু তেলাওয়াতই নয়; সেই সঙ্গে আয়াতগুলো অর্থ এবং তাফসীর সহকারে পড়া উচিত। মানব জীবনের নানা সমস্যার অকাট্য সমাধান দেওয়া আছে এই স্বর্গীয় বইতে। তাই ইসলামী বিধি-বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনার জন্য অর্থ ও ব্যাখাসহ কুরআন পড়া আবশ্যক।

দোয়া প্রার্থনা

সৌভাগ্যের এই রাত আল্লাহর নিকট বিগত সকল ভুল-ত্রুটির থেকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য সর্বোৎকৃষ্ট। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অনাগত দিনগুলোকে নতুন করে শুরু করার বিষয়। অর্থাৎ আল্লাহর ইচ্ছায় সামনের দিনগুলোর ভাগ্য পুরোপুরি পাল্টে যেতে পারে।

দান করা

রোজার মাসের নেক আমলগুলোর মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট হলো সাদকা বা দান করা। রমজান মাসে যে কোন পুণ্য কাজের সওয়াব অন্য মাসের তুলনায় বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। সেখানে কদরের রাতে দানের মতো এক মহৎ কাজ আরও বিশেষত্ব পায়। এই অর্থ সাহায্যটা নিজের অথবা মৃত প্রিয়জনের পক্ষ থেকেও করা যায়। অর্থ প্রদান ছাড়াও কাউকে পানি, খাদ্য বা কাপড়ও দান করা যেতে পারে।

২০ রমজানের সূর্যাস্তের আগ মুহূর্ত থেকে ঈদের চাঁদ ওঠা পর্যন্ত সময়ের ইতিকাফ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর সুন্নত। কোন একটি মহল্লা কিংবা গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে একজন ব্যক্তি এই ইতিকাফ করলেই তা সবার পক্ষ থেকে আদায় হয়ে যায়। এই ইবাদতের জন্য মসজিদে একটানা এক বা একাধিক দিন একান্তে অবস্থান করতে হয়। এ সময় দুনিয়াবী সব কাজ বাদ দিয়ে শুধুমাত্র নামায ও আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকতে হয়। সর্বক্ষণ আল্লাহর স্মরণে থাকার জন্য প্রশিক্ষণ এবং আত্মশুদ্ধি লাভের উপযুক্ত মাধ্যম এই ইবাদত।

ফরযের পাশাপাশি সুন্নত ও নফল নামায পড়া

ইসলামী জীবন ব্যবস্থার অন্যতম বুনিয়াদ নামায। দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামায একটি অবশ্য পালনীয় ইবাদত। রমজান মাসে একটি ফরয আদায় অন্যান্য সময়ের ৭০টি ফরযের সমতূল্য। আর এ সময়ের নফল ইবাদতে একটি ফরযের সওয়াব পাওয়া যায়। সুতরাং ফরযের পাশাপাশি সুন্নত ও নফল নামায আদায়ের জন্য রমজান মাস সেরা সময়। তন্মধ্যে হাজার রাতের চেয়েও উত্তম কদরের রাত এই ইবাদতের জন্য সর্বোৎকৃষ্ট সময়। বিশেষ করে সেহরির আগে তাহাজ্জুদ ও কদরের নামায উত্তম।

আরও খবর

                   

সম্পর্কিত