প্রতিনিধি ৬ এপ্রিল ২০২৪ , ৩:০৭:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ
বড় পরিসরের একটি গবেষণায় করোনার টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের শরীরে কিছু অস্বাভাবিক পরিস্থিতি শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা।
বিশ্বের আট দেশে করোনার টিকা নেয়া প্রায় ১০ কোটি মানুষের ওপর পরিচালিত এক জরিপের ভিত্তিতে এমন দাবি করেছেন তারা।এ বিষয়ে ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণার আওতায় থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে যারা ফাইজার ও মডার্নার মতো ‘এমআরএনএ’ টিকা নিয়েছেন, তাদের হার্টে প্রদাহের মাত্রা সামান্য বেশি দেখা গেছে। অন্যদিকে যারা অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকা নিয়েছেন তাদের মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার মতো একটি বিরল ব্যাধির সম্পর্ক পাওয়া গেছে।
গবেষকরা বলছেন ‘অ্যাস্ট্রাজেনেকা’ টিকা গুলেন-ব্যারি সিনড্রোমের উচ্চ ঝুঁকির সঙ্গে যুক্ত। গুলেন ব্যারি সিনড্রোম বা জিবিএস হচ্ছে এমন স্নায়বিক ব্যাধি—যা মাংসপেশিকে দুর্বল করে ধীরে ধীরে শরীরের শক্তি কমিয়ে দেয়। একপর্যায়ে নড়াচড়ার সামর্থ্যও হারিয়ে ফেলতে পারেন আক্রান্ত ব্যক্তি।
গ্লোবাল ভ্যাকসিন ডেটা নেটওয়ার্ক-এর নতুন এ গবেষণাটি প্রকাশিত হয়েছে ভ্যাকসিন জার্নালে। গবেষণায় ভ্যাকসিনের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রাথমিকভাবে ১৩টি নির্দিষ্ট অবস্থার ওপর নজর রেখে ৯ কোটি ৯০ লাখ টিকা গ্রহণকারী ব্যক্তির স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ধারাবাহিক তথ্যগুলো পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ফাইজার ও মডার্না টিকার প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে বারবার মায়োকার্ডাইটিস বা হৃৎপিণ্ডের পেশির প্রদাহে আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়।অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রাথমিক ডোজ নেয়ার ৪২ দিনের মধ্যে গুলেন-ব্যারি সিনড্রোমের উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি লক্ষ্য করা গেছে।
এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় যেখানে ৬৬টি উদাহরণ প্রত্যাশিত ছিল, সেখানে দেখা গেছে ১৯০টি। এ টিকা ‘সেরিব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বোসিস’র তিনগুণ বৃদ্ধির সঙ্গেও যুক্ত ছিল। এটি মূলত মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধার একটি ব্যাধি।
এদিকে এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মোঃ গিয়াস উদ্দীন (টিপু) বলেন, করোনার টিকা যারা ফুল ডোজ দিয়েছেন তাদের মধ্যে চর্ম ও এলার্জি জনিত রোগ বেশি আকারে দেখা যাচ্ছে। সেই হিসেবে পরিস্থিতি এক প্রকার ভয়াবহ ধরা যায়।
এদিকে করোনার টিকা নিলে শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় এমন প্রতিবেদন প্রকাশের দাবিটি বিভ্রান্তিকর বলে ভিন্ন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয় করোনায় টিকায় মানুষের ক্ষতি হচ্ছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে। সেই দাবিতে কিছু বাছাইকৃত পরিসংখ্যান উল্লেখ করা হয়েছে।
পোস্টগুলোতে বলা হয়েছে যুক্তরাজ্যে ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের মে পর্যন্ত টিকা নেয়া প্রায় ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে একই সময়ে টিকা না নেয়া ৬১ হাজারের মানুষের মৃত্যু হয়েছে।