সারাদেশ

মদনে নাব্যতা হারিয়ে নদী এখন চাষের জমি

  শহীদুল ইসলাম ৩০ মার্চ ২০২৪ , ৪:৩০:০৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মদনে নাব্যতা হারিয়ে নদী এখন চাষের জমি।
মদনে নাব্যতা হারিয়ে নদী এখন চাষের জমি।

নদী মাতৃক আমাদের এই বাংলাদেশ গ্রাম গঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য নদ-নদী ও খাল বিল।

বর্ষার মৌসুমে পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে আসা পলি ও বালি মাটি জমে ভরাটের কারণে দখল দূষণ ও নাব্যতা হারিয়ে অস্তিত্ব সংকটে রয়েছে এসব নদী। বর্তমানে খননের অভাবে মরা খালে পরিণত হয়ে মানচিত্র থেকে মুছে যাওয়া অবস্থায় রয়েছে এসব নদী। 

নেত্রকোনা মদন উপজেলায় প্রায় ১৪ টি নদী রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মগড়া নদী থেকে বর্নী নদী ফতেপুর ইউনিয়ন ফতেপুর গ্রামের পিছন দিয়ে প্রবাহিত হয়ে তিয়শ্রী ইউনিয়ন তিয়শ্রী বাজার হয়ে নায়েকপুর ইউনিয়নের চন্দ্রতলা গ্রামের পিছন দিয়ে বাসুঁঁরী বাজারের সামনে দিয়ে প্রায়-২০ কিলোমিটার নদী প্রবাহিত হয়ে পাশের উপজেলা কেন্দুয়া কৈজানি নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে।

এ ছাড়াও এ উপজেলায় ঘন্টাপতি ও ধলাই নদী নামে ছত্রকোনা গ্রামের পিছন দিয়ে প্রায়-৪ কিলোমিটার  প্রবাহিত হয়ে তিয়শ্রী ইউনিয়নের সাইটপুর গ্রামের পিছন দিয়ে মগড়া নদীতে মিলিত হয়েছে। এ নদীর পাশে থাকা কিছু 

  কতিপয় প্রভাবশালী লোকজন বিভিন্ন নদীর অংশ যে যার মতো দখলে নিয়ে পানি শুকিয়ে মাছ ধরে,আবার তারা সেখানে ধান চাষও করেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকি না থাকায় জনগণ যেমন একদিকে নদীর উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে,অপরদিকে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। হারিয়ে যাওয়া নদী বিষয়ে,

 মদন সরকারি হাজী আব্দুল আজিজ খান ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যক্ষ পরিবেশবিদ মোঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন,সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নদী দখল প্রতিরোধ করতে হবে তা না হলে পরিবেশের বিপর্যয় থেকে আমরা কেউ রক্ষা পাবনা। তাই জন সচেতনতা বৃদ্ধি নদী খননসহ দখল দারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

নদীর পাড়ে বসবাসরত কৃষক রফিক মিয়া,ফরিদ মিয়া লালন মিয়া ও জেলে শুশীল বর্মণ জাগরন বর্মণ তারা বলেন কি আর কইয়াম দাদা মনর কষ্টের কথা সরকার ঘুষান দিছিল জাল যার জলতার এখন আর নদীতে জলেই থাকেনা জাল দিয়া কি করাম,আমরাও এখন অন্য  কাজকাম করে জীবন চালাই।  সাবেক ইউপি সদস্য আহিম উদ্দিন ও পথচারি রুবেল মিয়া তারাও খুব হতাশা প্রকাশ করে বলেন,আমরা এই নদীর পানি দিয়ে সারা বছর ঘর গৃহস্থালির কাজ করতাম,বোরো ফসলের সময় কুনদীয়া পানি দিতাম তখন জমিতে পানি দেওয়ার কোনো চিন্তা করতে হতো না। এখন আর জমিতে সেচ দেওয়ার মতো পানি থাকেনা। গরু বাছুঁর নদীতে গুছল করাইতাম সময়ে সময়ে কত মাছ মারতাম। বর্ষার মৌসমে পলি ও বালির মাটি কনা এসে নদী গুলো ভরাট হয়ে গেছে। এই নদীগুলো খনন করা না হওয়ায় প্রভাবশালী লোকজনের দখলে চলে যাওয়ায় মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হয়েছে জেলেসহ সাধারণ জনগণ। নদীর তীরে যাদের বাড়ি বা জমি আছে তাদের বেশির ভাগ লোকজন নদী দখলে নিচ্ছে,যাদের জমি নেই তারাও ধান লাগানোর ছলনায় নদী দখল করছে। আবার কেউ কেউ সুবিধা অনুযায়ী মাটি উত্তোলন করে বাড়িঘর নির্মাণ করছেন। এমন কি সুযোগ মত মাটি উত্তোলন করে অন্যত্র বিক্রিও করছেন। নদী দখল ও খনন বিষয়ে জানতে চাইলে মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম মিয়া এ প্রতিনিধিকে জানান,নদী দখল করার কোন সুযোগ নেই,তবে শুকিয়ে যাওয়া নদী গুলোতে ধান চাষ করা যেতে পারে। বর্তমান সরকার শুকিয়ে যাওয়া অনেক নদীগুলো খনন করছেন। তবে আমাদের উপজেলার শুকিয়ে যাওয়া নদীগুলো খননের পরিকল্পনা আছে। 

এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান এ প্রতিনিধিকে বলেন,ইতিমধ্যেই নেত্রকোনা জেলায় প্রায় ৪৮টি নদী খনন করা হয়েছে। আরোও কিছু ভরাট হওয়া নদী তালিকায় রয়েছে। এগুলো পানি উন্নয়ন বোর্ড অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে আসলে খননের কাজ শুরু করা হবে।

 

আরও খবর

                   

সম্পর্কিত