অনলাইন ডেস্ক ২ আগস্ট ২০২৪ , ৯:৪৫:২৯ প্রিন্ট সংস্করণ
‘আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের কথা হলো, ওখান (ঢাকার দনিয়া এলাকা) দিয়েই অটোগাড়ি নিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন স্থানীয় কয়েকজন আমাকে ডাক দেয় সড়কের ওপর পড়ে থাকা এক কিশোরকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য। আর গিয়ে যখন দেখি নিথর দেহটি আমার কলিজার টুকরার (ছেলে), তখনকার মনের অবস্থা কাউকে বলে বোঝাতে পারব না।’
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে নিজের ছেলে আমিনের (১৬) গুলিবিদ্ধ লাশ খুঁজে পাওয়ার ঘটনাটি এভাবে জানাচ্ছিলেন বাবা ওবায়দুল হক খান।
একমাত্র সন্তান আমিনুল ইসলাম আমিনকে (১৬) নিয়ে দ্রুত ছুটে যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু, জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানালেন হাসপাতালে নেওয়ার আগেই আমিনের জীবনপ্রদীপ নিভে গেছে।
পরিবারের দাবি, ওই সময় নাশতা করার জন্য বাইরে বের হয়েছিল কিশোর আমিন।
এ ঘটনা গত ২১ জুলাইয়ের। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে সেদিন ওই এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ চলছিল। গতকাল বুধবার দুপুরে যাত্রাবাড়ীর দক্ষিণ দনিয়ায় এক কক্ষের বাসায় বসে ওবায়দুল ইসলাম বলছিলেন, ‘কাছে গিয়া চাইয়্যা দেখি, এ তো আমারই ছেলে। ছেলেকে দেখে বাবাগো, সোনাগো বলে অজ্ঞানের মতো হয়ে যাই। পরে আরেক সিএনজি করে ছেলেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়া যাই। পাঁচ মিনিট পরেই ডাক্তার জানায়, ছেলে আমার আর নাই। এর আগে প্রথমে ছেলের মারে ফোনে জানাই, ছেলে গুলি খাইছে। পরে আবার জানাই, ছেলে মইরা গেছে।’
আমিনের গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী বলেন, ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসন থেকে নিহতদের তালিকা সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমরা বাউফল উপজেলার সকল নিহতের তথ্য সেখানে পাঠিয়েছি। নিহতের পরিবার যাতে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা পায় সেজন্য স্থানীয় প্রশাসন সর্বোচ্চ সহায়তা করবে।