অনলাইন প্রতিনিধি ২৮ এপ্রিল ২০২৪ , ৪:০২:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেছেন, ছাত্রলীগের লক্ষ্য এক ঘণ্টার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃক্ষরোপণের রেকর্ড করা। জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলনে শামিল হয়ে আমরা গিনেস বুকস অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নিতে চাই।
শনিবার (২৭ এপ্রিল) ভোরে সড়কপথে ফেনী হয়ে খাগড়াছড়ি জেলা ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে যাওয়ার পথে ফেনী পৌরসভা চত্বরে জেলা ছাত্রলীগ আয়োজিত পথসভায় অংশ নেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পথসভায় অংশ নিয়ে বক্তব্য প্রদানকালে এসব কথা বলেন তিনি।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, দেশের নানা আন্দোলন সংগ্রামে, মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগ ভূমিকা রেখে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এবার জলবায়ু পরিবর্তন আন্দোলনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ভূমিকা রাখতে চায়। এ বৃক্ষরোপণ অভিযানেও ছাত্রলীগ চ্যাম্পিয়ন হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলিষ্ঠ থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বিনির্মাণে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করেন ঠিক একইরকম স্পিডকে ধারণ করে রাজনীতি করব। এটাই আমাদের মৌলিক চাওয়া। সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যদি সেই কাজগুলো করতে পারি তাহলে আগামী দিনে আমাদের লক্ষ্যগুলো সহজে অতিক্রম করতে পারব।
ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের যেকোনো প্রয়োজনে সবসময় সোচ্চার থাকবে উল্লেখ করে সাদ্দাম হোসেন বলেন, যারাই এ বাংলাদেশের মানুষের ভোট এবং ভাতের অধিকার নিয়ে নতুন করে ছিনিমিনি খেলার চেষ্টা করবে, আগুন সন্ত্রাস কায়েম, রাজাকারদের রাজনীতি বাংলার মানুষের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে এবং দেশের জনগণকে অপমান করে বিদেশিদের ধরে বাংলার ক্ষমতার মসনদে বসার স্বপ্ন দেখবে, তাদের স্বপ্নকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দুঃস্বপ্নে পরিণত করবে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণে, শিক্ষার্থীদের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আন্দোলন বিনির্মাণ করার প্রয়োজনে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সবসময় সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।
ফেনী জেলা ছাত্রলীগের প্রশংসা করে সাদ্দাম বলেন, ছাত্রলীগের রাজনীতিতে অনেক ভুলভ্রান্তি, গ্রুপিংসহ নানা ধরনের নেতিবাচক বাস্তবতা রয়েছে। যেগুলোর কারণে আমাদের সংগঠনের যে শক্তি, ঐক্য ও দৃঢ়তা রয়েছে সেই ধাপগুলো অনেক সময় অতিক্রম করতে পারি না। এই নানামুখী নানা নেতিবাচকতার ভিড়ে আপনাদের এমন ঐক্য, দৃঢ়তা ও শৃঙ্খলা সত্যিই ইতিবাচকতার আলো দিয়ে সবাইকে পথ দেখাতে পারে। এ ইউনিট যেভাবে সংগঠনকে সু-সংগঠিত করতে কাজ করছে সেটি সত্যিই মনোমুগ্ধকর। আমরা এটিই চাই।
সাদ্দাম আরও বলেন বলেন, ফেনীর যে ঐতিহ্য রয়েছে এটি সত্যিই আমাদের জন্য আশা জাগানিয়া। আপনাদের পরতে পরতে বীরের ইতিহাস। ফেনীর ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াই, সংগ্রাম, আত্মত্যাগ ও বিজয়ের ইতিহাস লেখা রয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাই এ ফেনীর গৌরবগাঁথা মাটি থেকে জন্ম নিয়ে আমাদের রাজনীতি, কথা সাহিত্য, পর্বতজয় ও অলিম্পিয়াডে নেতৃত্বে দিবে। আলোকিত মানুষ গড়ার প্রতিষ্ঠান হিসেবে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, ফেনী জেলা ছাত্রলীগ হবে ফেনীর সকল আলোকিত তরুণদের সেই প্রতিষ্ঠান। এতো অজস্র নেতাকর্মীর সঙ্গে ভোর দেখতে পারা আমার জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্তগুলোর একটি।
এসময় আধুনিক, যুগোপযোগী, স্মার্ট ও শিক্ষার্থীবান্ধব ছাত্ররাজনীতি বিনির্মাণে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের চ্যাম্পিয়ন থেকে ছাত্রসমাজকে পথ দেখাতে সকলের প্রতি আহবান জানান তিনি।
পথসভায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, এতো ভোরে জেলা পর্যায়ে এমন বড় জমায়েত করে ফেনী জেলা ছাত্রলীগ একটি রেকর্ড করেছে। এটির মাধ্যমে ফেনী ছাত্রলীগকে একটি মডেল ইউনিট হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। এ ইউনিট অনেক সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত। আগামীতে একটি ছাত্র সমাবেশের মাধ্যমে আবার এ জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা হবে বলে আশাবাদী।
কেন্দ্রীয় নেতাদের এমন কাছ থেকে দেখতে পেয়ে এবং দিকনির্দেশনা পেয়ে উচ্ছ্বসিত তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, দেশের ছাত্র সমাজের দুই আইডল আমাদের মাঝে প্রথমবারের মতো এসেছেন এটি আমাদের জন্য সৌভাগ্য। ফেনী ছাত্রলীগ তাদের বরণ করে নিতে আয়োজনের কমতি রাখেনি। রাতভর অপেক্ষা করেছে, স্লোগান দিয়েছে। সারারাত উৎসবে কাটিয়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।
ফেনী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদের পরিচালনায় পথসভায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও জেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন বিভিন্ন ইউনিটের হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে পথসভাকে কেন্দ্র করে ফেনী পৌরসভা চত্বরে রাতভর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অপেক্ষায় থাকেন ফেনী জেলা ছাত্রলীগের আওতাধীন সকল ইউনিটের নেতাকর্মীরা। রাতভর স্লোগানে স্লোগানে শহর মুখরিত করে রাখে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা